দৈববাণী
দৈববাণী কেন আসে
না আমার জীবনে?
রোজই এই
পাঁচফোড়নের ঝাঁঝ আর
ভাল লাগে না
আমার। নৈহাটি থেকে যে
মেয়েটি আসবে
আমাদের ক্লাসে পড়তে
সে দৈববাণী
পেয়েছে, বরের গাড়ি আছে।
হাসলে তার মাড়িও
দেখা যায় না।
ফলত দৈববাণী বুকে
চেপে সে সাওয়ারে
স্নান করে রোজ;
যাক গে যাক, দৈববাণীর
পিছন মারি – চলো
একটু চা হোক
ভোট কাকে
দিচ্ছ? বিরোধী বলে তো
কিছু নেই আর –
সবাই শাসকদল
যাক যে যাক –
যেমন নর্দমার জল
গড়াচ্ছে গড়াক,
বাই দ্য বাই
বলে রাখি সামনের
মাসে রিম্পির পঞ্চমটির
অন্নপ্রাশন,
সপরিবারে এসো, ঢাক বাজবে
সানাই বাজবে,
দৈববাণীও বাজবে গাছে গাছে,
যাক গে যাক – ওসব
কথা ছাড়ো,
নর্দমার জলে ভ্রুণ ভেসে যাচ্ছে যাক,
তাতে জাতীয়
পতাকারই বা কী? আর
বেলা ভৌমিকেরই বা
কী? খেলা তো
এগোচ্ছে! কি বল?
কিন্তু দৈববাণী যে চা
নিয়ে এলো না এখনো?
উড়ে যাওয়া ঐ বিমান
উড়ে যাওয়া ঐ বিমানে কারা যাচ্ছেন তো কে জানে!
আমি ফাঁকা অন্ধকার মাঠের মাঝে
দাঁড়িয়ে হিসি করছিলাম।
হঠাৎ দেখি বিমান, আমাদের বৈবাহিক বিচ্ছেদ সঙ্গে করে
উড়ে যাচ্ছে। ঐ বিমানে আমাদের
প্রথম দিনের চুম্বন,
প্রথম সিটে বসে আছে, আমাদের আবেগ বিরহ ঝগড়া ইত্যাদিও
হিসে শেষে দেখি বিমান আর নেই।
মেঘে মেঘে তাহার জাগতিক
ডানা লুপ্ত।
এখন শুধু ফাঁকা আকাশ। নিচে
ধানক্ষেত। রমেনের মায়ের
শেষ সন্তপ্ত রমণের রাত্রি, ঝিঝি-র ডাক। আবারও বিমানের
ঝিকমিক মৃদু আলো – আমারও হিসির শেষ ফোঁটা শিশির
বিন্দুতে মিলায় – দূরে কেউ
নেতাজি নেতাজি বলে হাঁক পাড়ে।
ছবিঃ কল্লোল চট্ট্যোপাধ্যায়
ছবিঃ কল্লোল চট্ট্যোপাধ্যায়
মেদহীন লেখা। অপূর্ব। দৈববাণী পড়তে শুরু করলে অনেক ভাবনা ভিড় করে আসে কিন্তু শেষ লাইনে এসে কেমন যেন ফিক করে হাসি পেয়ে যায়। উড়ে যাওয়া ঐ বিমান কবিতাটিও অনবদ্য। চমৎকার।
উত্তরমুছুনখুব ভাালো লাগলো।
উত্তরমুছুন