তৈমুর খানের কবিতা


সন্ত্রাস

এ অরণ্যে নেমেছে সন্ত্রাস
আমরা সব দিশেহারা পাখি
আজ উড়ান ভুলে গেছি
খুঁটে খুঁটে খাই মৃত্যুশোক
মৃত্যু খেয়ে বাঁচি

অস্ত্রের গর্জন শুধু, রক্তে ভাসে হাসি
আমাদের নিরর্থ গান, অসমাপ্ত কাহিনি
আগুনের শিসে বাজে ধ্বংসের বাঁশি
ভাঙা আকাশের টুকরো, অন্ধ রজনী

আতঙ্কিত ছায়াদের আন্দোলিত ভাষা
আত্মগোপনের পথে ধর্মের প্রহারা…
কোন্ ধর্ম কিছুই বুঝিনি শুধুই যাওয়া-আসা
কৌশলী শিকারির অদ্ভুত শিকার আমরা!


উজ্জীবন

উজ্জীবন ফিরে আসে আমার পাড়ায়
উজ্জীবনের সঙ্গে আমারও প্রেম হয়
আজ আবার নতুন স্নান, নতুন গন্ধ
আত্মাও পরে নেয় নতুন পোশাক

পরিধি বাড়তে থাকে আকাশ ও মাটিতে
নতুন সংকেত আসে অধিক জীবনের
সমস্ত সহজ পথে দেখি
উজ্জীবন বাঁশি বাজায়

উজ্জীবনের সুর চুরি করি আমি
উজ্জীবনের রঙে নিজেকে রাঙাই

আজ কোনও অসহ্য মেঘ নেই
ঘোর বজ্র নেই মর্ম আকাশে
চৈতন্য দাঁড় টানে কিশোরী নদীতে
তীরে তীরে ফলবতী আকাঙ্ক্ষার গাছ


ধর্মগ্রন্থ

তুমি আর একবার এলে দেখে যেতে পারতে
আমাদের বন্ধুত্ব কত বৃদ্ধ হয়ে গেছে।
এখন সিঁড়ি দিয়ে নামলে মনে হয়
পাতালে নেমে যাচ্ছি ।
এখন সিঁড়ি দিয়ে উঠলে মনে হয়
আকাশে উঠে যাচ্ছি।

এখন সব কথা প্রার্থনা হয়ে যায়
এখন সব বিশ্বাস ঈশ্বর হয়ে যায়
এখন তুমিও ঈশ্বরী হয়ে গেছ

আলো পড়ছে পড়ুক
এখন সকল কবিতাই আমার ধর্মগ্রন্থ।


ছবিঃ অঞ্জন চক্রবর্তী

৪টি মন্তব্য:

  1. Barabarer Priya Taimurdar kachh theke aabar tinti chuNye jaoya kabita...Dhanyabad

    উত্তরমুছুন
  2. অনবদ্য। কবিকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে যারা শিকারী তারা তো শিকারের জন্য যুগে যুগে তার কৌশল বদলেছে। বর্তমানে শিকারীর অত্যাধুনিক অস্ত্র হলো ধর্ম। আমরা তো ভীরু পাখি, না আছে বোঝার ক্ষমতা, না আছে ওড়ার। শিকার অবশ্যম্ভাবী জেনে মৃত্যুর প্রহর গুনছি। তিনটি কবিতাই অসাধারণ। পড়তে ইচ্ছে করে বারবার। কবির "এখন সব কথা প্রার্থনা হয়ে যায়/এখন সব বিশ্বাস ঈশ্বর হয়ে যায়..." অনেকদিন মনে থাকবে।

    উত্তরমুছুন

যোগাযোগ ও লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ spartakasmagazine@gmail.com