অংশুমান করের কবিতা


নীলকণ্ঠ

বৃষ্টির পরে, খেয়াল করে দেখবেন, গাছেদের একটু বেশিই সবুজ মনে হয়। মনে হয়, যেন হঠাৎ করেই ওরা ফিরে পেয়েছে যৌবন। আসলে বৃষ্টির সঙ্গে গাছেদের সম্পর্কই অদ্ভুত। বিজ্ঞান জানে না যে গাছেদের হৃদয়ে যখন জমা হতে থাকে কষ্ট, যখন জমা হতে হতে একসময়ে তৈরি হয় কষ্টের পাহাড়, তখনই বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি এসে ধুয়ে দেয় গাছেদের কষ্ট। তারপর গাছেদের কষ্ট ভেসে চলে। ছোটো নালা-বড় নালা-ছোটো নদী – বড়ো নদী হয়ে চলে যায় একেবারে সেই সেই গভীর, গভীরতর সমুদ্রে। প্রতিবার বৃষ্টির পর তাই গাছেরা একটু সবুজ হয়ে ওঠে, আর যুগ যুগ ধরে গাছেদের কষ্ট ধারণ করে সমুদ্র হয়ে ওঠে নীল।


কবি

আমি লোকটা খুব একটা সুবিধের নই
সেটা আর কেউ না জানুক, আমি জানি
আমি জানি কাকে কাকে অভিশাপ দিয়েছি, আর
তছনছ করে দিয়েছি কোন কোন সম্পর্ক
তিপান্নজন তরুণ কবির কবিতা দলা পাকিয়ে
আগুনের মধ্যে ছুড়ে দিয়েছিলাম একদিন

আমি জানি
আমি লোকটা খুব একটা সুবিধের নই
সারাদিন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে এই শব্দঃ
ক্ষতি ক্ষতি ক্ষতি
ঈর্ষা ঈর্ষা ঈর্ষা
কিন্তু
সাদা পাতার ওপর আমি কখনও
লিখতে পারিনি ‘ধ্বংস’
শুধু লিখেছিঃ পাহাড়, তুমি আরও গম্ভীর ও সুন্দর হয়ে ওঠো


* পুনঃপ্রকাশিত

২টি মন্তব্য:

  1. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  2. দারুণ, দারুণ। গাছেদের সঙ্গে বৃষ্টি, নদী,নালা, সমুদ্রের এক নতুন সম্পর্ক স্থাপিত হলো। বিজ্ঞান এর হদিশ পাবে না। মুগ্ধ হয়ে বারবার পড়তে ইচ্ছা জাগে।
    তরুণ কবিদের সৃষ্টির মধ্যে অনেক আনন্দ আর বেদনা লুকিয়ে থাকে। একজন কবি, মানুষ হিসাবে যত নিকৃষ্টমাণের‌ই হোন না কেন, তার সৃষ্টিতে তিনি সুন্দরের‌ই পূজারী। দুটি কবিতাই অনবদ্য।

    উত্তরমুছুন

যোগাযোগ ও লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ spartakasmagazine@gmail.com