এক
একটু সহজ করে
কথা বলো, দুপাশে সকলে
রয়েছে
ব্যালেন্স করে, পা পিছলোলে পড়ে যেতে পারে-
তারের উপর দিয়ে
হাঁটা এই আলো-অন্ধকারে
পরেছ মুখোস,
তাই মুখ নয়, মুখের আদলে
মিছিল চলেছে,
তারা সকলেই বেঁচে উঠতে চায়;
ভেঙেছে
হেমন্তঋতু হ্যারিসন রোডের উপরে
নীচে রক্তবাহী
মেট্রো নিজেদের মোকাবিলা ক’রে
শুধু পৌঁছে
দিতে চায়, দক্ষিণে অথবা তীব্র বাঁয়ে
বোঝাই, কখনও
আমি কোথাও যাব না, থেমে যাও।
আমার জটিল
ভালো; যেভাবে গাছের রান্না হয়
চোখের নিমেষে;
তবু চোখ তাকে দেখে না সহজে।
গোপন, আসলে
ভাষা। তুমি তাকে নীরবে জাগাও।
সহসা স্টেশনে
আসে দূরগামী গ্যালপিং ট্রেন।
‘অনুগ্রহ করে
একটু নিরাপদে দূরে দাঁড়াবেন’।
দুই
চলন্ত, তোমায়
বলি। নিভে যায় সমস্ত প্রদীপ।
তুমি কি আড়াল
থেকে ডেকে দেবে ভেবেছিলে আজ?
এখন কোথাও নেই
বিপ্লবের প্রকৃত জরিপ
জমিও লাঙলহীন।
দ্রোণসম উড়ে আসে বাজ।
ভাবো অন্ত্যমিল
কেন এরকম কথা কেড়ে নেয়?
আসলে তো লক্ষ্য
রাখা। তুমি-আমি কেবল পুতুল।
অথচ বিশ্বাস
করি, যে নেয় সে ফিরিয়েও দেয়।
রক্তাক্ত বোমার
পাশে জেগে থাকে ছিন্নভিন্ন উল।
কে জানে
শিল্পের দোষে মরে গেছে কিনা কবিতার
নিজস্ব
রন্ধনশিল্প; অক্ষরে রক্তের দাগ লেখা।
তোমার করার
কিছু নেই, আছে ওয়াচটাওয়ার।
আড়ালে সেঁদিয়ে
যাও। দেখো আজ যেটুকু অদেখা।
টিফিনবক্সের
মধ্যে লুকিয়ে এনেছি আমি বোমা।
বিপ্লব বুঝেছ?
তবে, এটুকুই রাজনীতি তোমার।
তিন
আমার প্রেমের
কাব্যে এত রক্ত কেন ভগবান?
বাজার, মাছের
গন্ধ, মাংসের দোকানে ভিড় ঠেলে
সে আসে
কচুরিগন্ধে, পাশে তেলেভাজার দোকান।
আমার প্রেমিকা
জানে হাসপাতাল রয়েছে আড়ালে।
এত রক্ত কেন,
তাও, মনে হয়, রক্তের অভাব
বোঝেনি মানুষ
ঠিক; দরদামেই জীবন কেটেছে।
প্রিয় নার্স
শুয়ে আছে, সাদা বেড, বিষাক্ত খোয়াব
মাছের কাঁটার
মতো কে খাবে তোমায় বেছে বেছে?
মানুষ ভোগের
পাশে ত্যাগ ভাবে বেড়াতে বেরোয়।
তারও তো ভোগের
কথা মনে হয় একাকী বিকেলে-
সেও তো কোথাও
নেই; ইনসমনিয়ার পাশে শোয়
হত্যার
তদন্তসূত্র ফেলে রেখে, অন্ধকার জ্বেলে।
প্রচুর খিদের
গন্ধ প্রেমের কবিতাখানি ঘিরে-
ঈশ্বর রামপ্রসাদী
গাইছেন মানবশরীরে।
ছবিঃ অঞ্জন চক্রবর্তী
ছবিঃ অঞ্জন চক্রবর্তী
মন ভরিয়ে দিল তিনটি কবিতায়... সনেট... কবিকে ধন্যবাদ ...এই উপহারের জন্য
উত্তরমুছুনকবিতাতো দারুণ সঙ্গের ছবিটিও অসাধারণ
উত্তরমুছুনআমার অন্যতম প্রিয় কবি
উত্তরমুছুনএই কবিতাগুচ্ছ নিয়ে কিছু বলতে ইচ্ছে করে না। মনে হয় কবিতা পড়ি, তারপর হৃদয়ে এর অনুরণন চলতেই থাকুক। অনুরণন স্তিমিত হয়ে এলে আবার পড়ি। এখান থেকে বেরিয়ে অন্য জগতে আর প্রবেশ করতে ইচ্ছে করে না। কবিতার এই লাইনটা তো অপূর্ব লাগলো, "একটু সহজ করে কথা বলো, দুপাশে সকলে রয়েছে ব্যলান্স করে..."! সমগ্র কবিতাজুড়ে কবি যেন শাণিত ছুরি চালিয়েছেন ভাষা দিয়ে। এ ছুরির আঘাত ক্ষতবিক্ষত করে দেয় আমাদের ভাবনাকে, আমাদের নিশ্চুপতাকে। জাগিয়ে দিয়ে গেল আমার সুপ্ত চেতনাকে। কবিকে অসংখ্য অভিনন্দন।
উত্তরমুছুন