স্নেহাংশু বিকাশ দাসের কবিতা



ধূসর জন্মের কবিতা  


এক

আমার কোনো বন্ধু নেই
নিঃসঙ্গ দেওয়ালে কোনো জানালাও নেই

সব গন্তব্য মুছে ফেলে
আমার অজস্র যাত্রাবিরতি

দুই


এই তো সেই স্টেশন!
কুয়াশায় ডুবে আছে।
অসমাপ্ত অক্ষরগুলো জীবনের তিন ভাগ জল জেনেও
ভাঙন-স্পর্শ পেলে শুষে নেয় জমাট মেঘ।
বৃষ্টি ফোঁটায় নৈঃশব্দ্য ছিল, তবুও
তরুণীর চোখে এত ব্যথা কেন
এই অবেলায়? মলিন মুখ ছুঁয়ে গেছে
রতিক্লান্ত চাঁদ – এই রেলপথ নিয়ে যাবে আলোর দিকে?

তিন


অসমাপ্ত মৃত্যুর দিকে ঝড়, ঝড়ের শব্দ, শোনো,
ধেয়ে আসছে পরিযায়ী পাখিরা, গাছের হৃদয় আজ
ভেসে যাবে নদীপাড় ধরে। ঘেন্না হবে, অকপট ঘেন্না,
কীই বা করবে বলো? দৃষ্টিতে বাজবে শুধু বিষাদের সুর –
অভিমানের স্বল্প আলো – অন্যমন, আমাকে ফেরাবে তুমি?

চার


ইতিহাস নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই
ভাঙা মন্দির ভুলতে দেবে না অবসাদ, ক্ষয়
অচেনা পৃথিবী তৈরি করেছে আশ্রম, সবুজ প্রত্যাশা
বাইরের ছায়া মায়ার স্পর্শ হয় বুকের গভীরে
আর প্রিয় নদী– অলীক কল্পনা শুধু
আলো নিভে গেলে ছেঁড়া ছেঁড়া ঘুম....স্টিমারের
বাঁশি....মা’র কথা মনে পড়ে


বিকেলের কবিতা


দ্বিধাময় বিকেলের আলো হরিণীর চোখে এসে বসে
দৃশ্যের ওপারে একাকী লাইটহাউস– নতজানু
উপত্যকার গানে, কুয়াশার স্রোতে প্রত্যাখ্যান বেজে ওঠে –
                 বিনত চোখভাষা, পুরুষ হৃদয়

আসলে তো অন্ধ মানচিত্র জুড়ে স্বগতোক্তি শুধু

নির্জন ঘুম এসে বসে ক্যালেন্ডারের পাতায়
নক্ষত্রের আকাঙ্ক্ষা তখন আবেগের টুকরো আগুন

অবসাদ মিশে যায় বর্ণমালার রঙে, ইতিহাস
খুঁজে নেয় বাসযোগ্য ভূমি, নিঃসঙ্গ চেরাপুঞ্জি গ্রাম


চিত্রঃ অর্ণব নন্দী

২টি মন্তব্য:

যোগাযোগ ও লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ spartakasmagazine@gmail.com